ওয়েব ডেস্ক: শচীন পাইলট (Sachin Pilot) সেই তখন থেকে খবরের শিরোনামে আছেন, যখন ২০১৮ সালে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী পদে আসিন হন অশোক গেহলট। সেই তখন থেকেই অশোক গেহলট ও শচীন পাইলটের বিবেদ খবরের শিরোনামে। অশোক গেহলট সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে সিনিয়ার লিডারদের কাছেও হুঙ্কার তুলতে কসুর করেননি। ফলস্বরূপ হারিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ। এমনকি ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে তারপরও না শচীন (Sachin Pilot) কংগ্রেস ছাড়তে পেরেছেন! আর না কংগ্রেস শচীনকে ছাড়তে পেরেছে। তবে কি এমন তত্ত্ব রয়েছে এর পিছনে?
কংগ্রেসের ‘শ্চীন তত্ত্ব’ –
২০২৩ এর শেষের দিকেই রাজস্থানে রয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। রাজস্থানের ভোটের ইতিহাস বলছে ২০১৮ সালে রাজস্থানে ভোটে জয় এসেছিল শচীনের (Sachin Pilot) হাত ধরেই। কেননা শচীনের জনপ্রিয়তা অশোক গেহলটের তুলনায় অনেক গুণ বেশি। তাছাড়া রাজস্থানের ভোট স্ট্র্যাটেজি বলে সেখানে কমবয়স্ক ভোটারদের সংখ্যার যে হার তা বয়স্কদের তুলনায় বেশি। ফলে শচীনের জনপ্রিয়তা এখানে অনেকাংশে কাজে লাগে। আর এই মুহুর্তে কংগ্রেস যদি শচীনকে দল ত্যাগ করায় বা শচীন (Sachin Pilot) যদি নিজেই তা করেন, তাহলে ভোট বাক্সে তার প্রভাব পড়বে।
পাইলটের (Sachin Pilot) এই অনশনের মূলে রয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। পাইলটের অভিযোগ, পূর্বতন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের জমানায় ওঠা দুর্নীতির অভিযোগগুলি আড়াল করার চেষ্টা করছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সরকার। আর তাই সরকারের বিরুদ্ধেই ‘অনশনে’ বসেছেন তিনি।
শচীনের ‘কংগ্রেস তত্ত্ব’ –
কংগ্রেসের অসহতা বোঝা গেলেও অসহায় রয়েছে শচীন (Sachin Pilot) নিজেও। এই মুহুর্তে তিনি যদি কংগ্রেস ছাড়েন তাহলে তার কাছে এতো বিধায়ক নেই, যে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে আলাদা সরকার গড়বেন। অতএব তাঁর বন্ধু জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পথ অনুসরণ করতে পারবেন না। একই সাথে, যদি ভাবেন কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন তাহলে সেখানেও নিজের আলাদা স্বত্ত্বা গড়ে তুলতে পারবেন না। কেননা রাজস্থানে বিজেপির ঘরে ইতিমধ্যেই রয়েছেন বসুন্ধরা রাজে, ওমপ্রকাশ মথুরের মতো হেভিওয়েট নেতারা। অতএব বিজেপি যদি নির্বাচনে সরকার গড়ে তাহলে মুখ্যমন্ত্রীত্বের অধিকারী রয়েছেন অনেকেই। সেখানে শচীন পাইলটের (Sachin Pilot) কোনও স্থান হবে না।
শচীনের (Sachin Pilot) জন্যে কোন রাস্তা খোলা?
এই মুহুর্তে শচীন পাইলট (Sachin Pilot) দুজনকে নিজের লক্ষ্য করতে পারেন। এক, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুই, জগন মোহন রেড্ডি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুরুটা কংগ্রেসের হাত ধরে হলেও পরবর্তীতে কংগ্রেসের সাথে সম্পর্ক ছেদ করে তৃণমূল-কংগ্রেস গড়ে তোলেন। এবং বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, YSR রেড্ডির মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে জগন মোহন রেড্ডিকে মুখ্যমন্ত্রী করার আলোচনা শুরু করেছিল কংগ্রেস। তবে জগন মোহন নিজেই আলাদা দল তৈরি করে বর্তমানে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
আপাতত, শচীন পাইলটের (Sachin Pilot) কাছে রয়েছে বিভিন্ন পথ। সেই পথের সমীকরণও জানেন তিনি। কংগ্রেসও জানে তাঁদের মাপকাঠি। তবে এইসবের মাঝে শচীন কোন পথে হাঁটেন,এখন সেটাই দেখার।