ওয়েব ডেস্ক: কথায় আছে ইতিহাস বারবার ফিরে আসে। আপনার কর্মের ফল এই জীবনেই আপনাকে ভুগতে হবে। অন্তত শনিবার রাতে আতিক আহমেদ (Atique Ahmed Live Encounter) এবং তাঁর ভাই আশরফ আহমেদের ওপর হয়ে যাওয়া লাইভ এনকাউন্টার এই প্রবাদেরই সঠিক উদাহরণ। অবশ্য এর পূর্বাভাসটা আগেই দিয়েছিলেন আতিক। ২০০৪ সালে এমনই কোনও মামলায় ধরা পড়ে সাংবাদিকদের আতিক বলেছিলেন, ‘একদিন এনকাউন্টারেই খুন হব আমি, আমায় অপরাধীদের কেউ মারবে অথবা পুলিশ’।
অতীতের করা কোনও ভুলের মাশুল যে এই ভাবেই গুণতে হয় তা যেন আরও একবার প্রমাণ করে দিল ইউপি। প্রায় ১৭ বছর আগের এক ঘটনা। যে সময় ঐ মহিলাকে চিনতেনই না আতিক (Atique Ahmed Live Encounter)। অথচ অযথায় পাঙ্গা নিয়ে নেন মহিলার সাথে। আর সেই মহিলার করা অভিশাপ আজ যেন হাতেনাতে ফলে গেল। কি ঘটেছিল সেদিন? দেখুন এই প্রতিবেদনে –
২০০৪ সালে ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে তখন আতিক সাংসদ
সমাজবাদী পার্টির টিকিটে সে বার ভোটে জিতেছিলেন তিনি
আতিক সাংসদ নির্বাচিত হতেই তাঁর ইলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র ফাঁকা হয়ে যায়
২০০৫ সালে সেখানে বিধানসভা উপনির্বাচন হয়
আতিকের (Atique Ahmed Live Encounter) জায়গায় ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন ভাই আশরফ
কিন্তু বহুজন সমাজ পার্টির রাজু পালের কাছে হেরে যান আশরফ
আতিক তাঁর ভাইয়ের এই ভোটে হার মেনে নিতে পারেননি
২০০৫ সালের ২৫ জানুয়ারি খুন করে রাজু পালকে
তাঁর ঠিক ৯ দিন আগেই বিধায়ক পদে শপথ গ্রহণ করেই বিয়ে করেন রাজু
রাজু পালের সাথে তখন সদ্য বিবাহিত জীবন কাটাচ্ছেন পূজা পাল
ঠিক সেই সময়ই বাড়ির কাছেই খুন করা হয় রাজু পালকে
খুনের নেপথ্যে ছিলেন আতিক এবং তাঁর ভাই আশরফ
আতিক, আশরফ এবং ৭ জনের বিরুদ্ধে FIR করেন পূজা পাল
যদিও রাজু খুনের মামলায় আতিক-সহ বাকি সাত জনই বেকসুর খালাস পায়
বলা হয়, আতিকের (Atique Ahmed Live Encounter) মৃত্যু কি রাজু পালের মৃত্যু ছিল আরও ভয়ঙ্কর। গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। এখানেই শেষ নয়, রাজুর প্রতি এতোটায় ক্ষোভ ছিল যে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও তার ওপর গুলি করা হয়। সেই সময়ই পূজা পাল বিধবা বেশে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন,”আমার বিবাহিত জীবন যে বা যারা কেড়ে নিল; তাঁদের পরিণতিও এমনটায় হবে। তাঁরাও এই ভাবেই প্রাণ হারাবে”।
পূজা পালকে হইতো ভুলেই গিয়েছিল আতিক (Atique Ahmed Live Encounter) ও তাঁর পরিবার। কিন্তু ১৭ বছর আগে ফের ফিরে আসে রাজু পাল হত্যা মামলা। রাজু পাল খুনের অন্যতম সাক্ষী ছিলেন আইনজীবী উমেশ পাল। সেই উমেশকেও চুপ করিয়ে দেয় আতিক। উমেশ পালের ওপর শ্যুটআউট ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সিসিটিভিতে ধরা পড়েছিল সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ড।
আর সময়ের কি অদ্ভুত খেল, সেই অভিযুক্ত গ্যাংস্টার আতিক (Atique Ahmed Live Encounter) ও তাঁর ভাই আশরফের লাইভ এনকাউন্টার দেখল গোটা দেশ। অনেকেই বলছেন, এর পরিণতি এরকমই হয়। আতিক অধ্যায় শেষ হতে পারত এই ভাবেই, আর শনিবার হলও তাই!